Breaking News

লাফিয়ে বাড়া স্বর্ণের দামে হঠাৎ পতন, জানা গেল কারণ

চলতি বছরের শুরু থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড হয়। প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম প্রায় ২ হাজার ৮০০ ডলারে পৌঁছায়। তবে এখন প্রতি সপ্তাহেই কমছে মূল্যবান ধাতুটির দাম। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় ও ডলারের দাম বৃদ্ধিকে স্বর্ণের দাম হ্রাসের কারণ হিসাবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বর্ণের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণের বাজারে। ফলে ধাতুটির দাম কমেছে। পাশাপাশি যুদ্ধ পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার শঙ্কা কাটতে শুরু করার প্রভাবও পড়েছে বাজারে। স্পট মার্কেটে একদিনে স্বর্ণের দাম কমেছে ১৩ শতাংশ। গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫৬১ ডলারে নেমেছে।

মার্কিন বাজার পর্যবেক্ষণ সংস্থা কেসিএম ট্রেডের শীর্ষ বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটেরার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় ডলারের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। ডলারের মান শক্তিশালী হওয়ায় স্বর্ণের দাম কমার মূল রহস্য।

বাজুস সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, এই বছরের শুরুর দিকে বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা, গুজব ও ফেডারেল রিজার্ভের সুদহারের প্রভাবে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগ বেড়ে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ ও ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে সংঘাতের কারণে পৃথিবী ৩য় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঝুঁকছে বলে একটি গুজব উঠেছিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা সে সময় বিনিয়োগের উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণকেই বেছে নেওয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল দাম।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা, গুজব ও ফেডারেল রিজার্ভের সুদহারের প্রভাবে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগ বেড়ে গিয়েছিল। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে বাইডেন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পৃথিবী ৩য় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঝুঁকছে বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা সে সময় বিনিয়োগের উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণকেই বেছে নিয়েছিল। যার প্রভাবেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল দাম। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় ও তার ‘ডু দি বিজনেস’ নীতির ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছেন। এতে স্বর্ণের ওপর চাপ কমায় ধাতুটির দাম কমছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের যে প্রবণতা চলছে এতে দাম আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বিশ্ববাজারে দাম কমলে এর প্রভাব পড়ে দেশের বাজারেও। দাম কমলে যে কোনো সময় দেশের বাজারেও দাম কমানো হতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) গত ১৪ দিনে দেশের বাজারে ৫ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে। এর মধ্যে ৪ বারই স্বর্ণের দাম কমিয়েছে সংগঠনটি। টানা চার দফায় ভরিতে মোট দাম কমানো হয়েছে হয়েছে ৯ হাজার ১৭ টাকা। সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাজুস। এবার ভরিতে ১ হাজার ৬৮০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৯ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৯ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৬২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯০ হাজার ২৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলতি বছর দেশের বাজারে ৪৯ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। যেখানে ২৮ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

About Admin

Check Also

‘মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দ*খলে নেব’

মাত্র ১৫ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা বাংলাদেশ দখলে নেবে বলে হুমকি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস মালদা জেলার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

No comments to show.