Breaking News

জাতীয় ঐক্যের ডাক!

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় ঐক্যের’ ডাক দিতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

এ বিষয়ে আলোচনা করতে আজ বুধবার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এবং বৃহস্পতিবার ধর্মীয় সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসবেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় উপ-প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস সচিব বলেন, জাতীয় ঐক্য ঘোষণা নিয়ে আজ বুধবার বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবেন প্রধান উপদেষ্টা। কাল বৃহস্পতিবার তিনি ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে একটি ডায়ালগ আহ্বান করেছেন। এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য হচ্ছে তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন।

আজ বিকাল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠকে কোন কোন দল অংশ নেবে সেটি স্পষ্ট করেননি প্রেস সচিব। এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কোন কোন রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হবে তা এখনই জানাতে পারব না। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কখন কোথায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে মিস ইনফরমেশন ছড়াচ্ছে। আমাদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। এই ভয়াবহ তথ্য-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে দাঁড়াতে হবে। সেই সঙ্গে ঐক্য ধরে রেখে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সাম্প্রদায়িক ও হাইকমিশনে হামলা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। দেশের সুশীল সমাজ, পেশাজীবীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রেস সচিব।

শেভরন আবারও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, শেভরন মনে করছে বাংলাদেশে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে তাতে আগামীতে জ্বালানির চাহিদা আরও বাড়বে। পতিত সরকার গত ২ বছর শেভরনের কোনো পেমেন্ট দেয়নি। আর বর্তমান সরকার ৬ মাসের মধ্যে পেমেন্ট করবে।

এদিকে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে চলে যাওয়ার পর দেশের দায়িত্ব নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। তখন থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে বেশ সরব ভূমিকায় রয়েছে ভারতের গণমাধ্যম; যাকে ‘অতিরঞ্জিত’ এবং ‘সংঘবদ্ধ অপপ্রচার’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে বাংলাদেশ সরকার। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে দুদেশের সরকারের মধ্যে কয়েকবার বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সংখ্যালঘুদের আট দফা দাবি আদায়ে মাঠে নামা সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও উপরে উঠেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন নাকচের দিন তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হলে, সেই ঘটনার জন্য ইসকনকে দায়ী করে বক্তব্য দেয় বিভিন্ন দল, সেই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকেও দায়ী করা হয়।

এর মধ্যে গত সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা হয়, যাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ হিসেবে বর্ণনা করে ‘ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছিলেন।

About Admin

Check Also

নিজের গড়া ট্রাইব্যুনালেই নিজেই আসামি কামরুল ইসলাম

গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান অ্যাডভোকেট কামরুল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

No comments to show.