ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার পর থেকে মোদি সরকারের যেনো হাসিনা ছাড়া আর কিছুই মাথায় আসে না। এক হাসিনার জন্য ভারতের দাদাবাবুরা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ১২টা বাজাচ্ছে পদে পদে। হাসিনা পালানোর পরপরই ভারত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। যে ভুলের খেসারত তাদের এখনো দিতে হচ্ছে আর দিতে হবে চিরকালই। এর মাঝেই আবার নতুন করে বড় ধরণের ভুল করে বসলো মোদি সরকার। হঠাৎ করেই বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে ভারত। আপাতদৃষ্টিতে এটি বাংলাদেশের জন্য সমস্যা মনে হলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন ভারত হাসিনার বুদ্ধিতে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করায় আবারও নিজেদের পা‘য়েই কুড়াল মারলো দাদাবাবুরা।
বর্তমানে ভারতের অর্থনীতির অবস্থা এমনিতেও ভালো নেই। ভারতীয় মুদ্রার দরপতন এখন দৃশ্যমান। ভারতীয় গণমাধ্যম প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মত দেশগুলোতে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে খুব সহজেই বাংলাদেশ তাদের পণ্য দেশগুলোতে বাঁধাহীনভাবে রপ্তানী করতে পারতো। ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশ এই সুবিধা পেয়ে আসছিলো। এখন প্রশ্ন হলো ভারতের নেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে কিরকম বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সেদেশের অর্থনীতিতে। বাংলাদেশ ভারতের কাছে এই সুবিধা ফ্রীতে নেয়নি বরং এর জন্য ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছে বড় অংকের রাজস্ব আয় করতো। ভারতের বর্তমান টালমাটাল অর্থনৈতিক অবস্থায় যা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনটিই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দেওয়ার পর বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছিলো ভারত, এমনকি চিকিৎসা ভিসা বন্ধ করার মত নেক্কারজনক কর্মকান্ডও ঘটায় নরেন্দ্র মোদির সরকার। তবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের মাস্টারপ্ল্যানের কাছে ধরাসায়ী হয় দাদাবাবুরা। ড. ইউনূসের দূরদর্শিতায় ভারতের বিকল্প হিসেবে আরো ভালোমানের অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবার দেশ চায়নাতে কম খরচে বাংলাদেশিদের জন্য নিশ্চিত হয় ভিসা আর উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা। অপরদিকে ঐ সিদ্ধান্তের ফলে নিজেদের দেশের ব্যবসায়ীদেরই রুটিরুজির ১২টা বাজিয়েছিলো মোদি সরকার। তাই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তে আবারও তাই নতুন করে নিজেদেরই ক্ষতি করলো দাদাবাবুরা এমন মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
এবার ভারতের নেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশও নিচ্ছে পাল্টা ব্যবস্থা। ভারতের এই ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাংলাদেশের তেমন কোনো সমস্যা হবে না বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, ‘হঠাৎ করে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে ভারত। তবে এতে বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংকট কাটাতে চেষ্টা করা হবে। বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
নিজস্ব সক্ষমতায় প্রতিযোগিতায় যেন কোনো ঘাটতি না হয় সেটা নিয়ে কাজ করছি। একই সঙ্গে কাজ করছি যোগাযোগের ব্যাপারেও যাতে কোনো ঘাটতি না হয়।’ কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসময় বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কিছু আছে অবকাঠামোগত বিষয়, কিছু আছে খরচ বৃদ্ধি, এসব নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, সমস্যা কাটিয়ে উঠব।’