ছাত্রের সঙ্গে অনৈতিক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের দায়ে শিক্ষিকাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে এ ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যম নিউইউর্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দণ্ডিত শিক্ষিকা মেলেশা কার্টিস একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়াতেন। সেখানকার ১৪ বছর বয়সী এক ছাত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন। গত বছর এ ঘটনা সামনে আসার পরপর পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে শুরু করে।তদন্তে জানা যায়, মেলেশা কার্টিস ১৪ বছর বয়সী ওই ছাত্রের সঙ্গে গোপনে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। বিষয়টি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে জানাজানি হয়, যখন এক ব্যক্তি পুলিশে অভিযোগ করেন, তিনি ১৪ বছর বয়সে কার্টিসের যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি লেকল্যান্ড পার্ক মিডল স্কুলে পড়তেন এবং তখনই এই ঘটনার শিকার হন।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মেলেশা কার্টিস তার পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে ওই ছাত্রের সঙ্গে একাধিকবার যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তদন্তে আরও জানা যায়, তিনি ওই ছাত্রকে অ্যালকোহল এবং গাঁজা সেবন করিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২০ বার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল। এসব ঘটনার কিছু তার ব্যক্তিগত গাড়ি এবং তার মায়ের বাড়িতেও সংঘটিত হয়েছিল।
এই ঘটনার পর ম্যারিল্যান্ডের আদালত মেলেশা কার্টিসকে ‘অপ্রাপ্তবয়স্কের প্রতি যৌন নিপীড়ন’ এবং ‘পেশাগত নীতিমালা লঙ্ঘন’ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।একইসঙ্গে আদালত বলেন, শিক্ষকদের দায়িত্ব শুধু পাঠদান নয়, তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও নৈতিক উন্নতির জন্যও দায়ী। এ ধরনের অপরাধ শিক্ষকতার পবিত্র পেশাকে কলঙ্কিত করে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে। এই রায় ভবিষ্যতে এমন কাজের জন্য অন্যদের সতর্ক করবে।
এদিকে আদালতের এই রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে উল্লেখ করে সমাজ বিশ্লেষকরা বলেন, এটি দেখায়- শিক্ষকরা পেশাগত নৈতিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল এবং সৎ থাকতে বাধ্য। এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তি এড়ানোর সুযোগ নেই। এই রায় শুধু অপরাধীদের জন্য নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুশাসন বজায় রাখার জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সমাজ বিশ্লেষক আরও বলেন, এই রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা শিক্ষকদের জন্য আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে। শিক্ষাক্ষেত্রে পেশাদারত্ব বজায় রাখতে বিদ্যালয় এবং সরকারের কঠোর ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।
এ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগের সময় মানসিক পরীক্ষা করা, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে পরিবার, বিদ্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।