Breaking News

শিল্পপতি প্রেমিককে ১১ টুক..রো, বেরিয়ে এলো আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রেমের সম্পর্কের জেরে জসিমউদ্দিন মাসুম নামের এক শিল্পপতিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জবাই করে হত্যা করেন পরকীয়া প্রেমিকা রুমা। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়। হত্যা ও মরদেহ সরাতে রুমাকে সহায়তা করে তার বান্ধবী রুকু।
গেল বুধবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পলিথিনে মোড়ানো মাসুমের সাত টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় তারা।

জানা গেছে, এরই মধ্যে কাফরুল থেকে রুমা, রুকুসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরে রূপগঞ্জ থানায় হওয়া হত্যা মামলায় থেকে রুমা ও রুকু গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, হত্যার পর কাফরুলের বাসায় ছিলেন রুমা। নিরুদ্বেগ চলাফেরা ও ঘুমাতে থাকেন তিনি। বুধবার রাতে পুলিশ তাকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে সবকিছু স্বীকার করেন তিনি।

রুমা দাবি করেন, কাফরুলের তিন কক্ষের ওই ফ্ল্যাটে তার ছোট বোন, বান্ধবী, ভাবি ও তার বাচ্চা থাকে। দুধের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয় মাসুমকে। দুদিন এভাবে থাকার পর মঙ্গলবার একটি কক্ষের বাথরুমে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরা করা হয়। এরপর তার এক বন্ধুকে দুটি ব্যাগ নিয়ে আসার কথা বলেন। দুটি ব্যাগে ভরে সাত টুকরা রূপগঞ্জের একটি লেকের পাড়ে এবং অন্য চারটি অংশ ৩০০ ফিট এলাকায় একটি কাশবনে ফেলে আসেন। বৃহস্পতিবার রুমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাশবন থেকে চারটি টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে হাত, পা ও কোমর থেকে বুকের খণ্ডিত অংশ ছিল।

রুমা দাবি করেন, ফ্ল্যাটের অন্যরা খুনের বিষয়টি জানতেন না। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, ব্লেড বনানীর ২০ নম্বর সড়কের একটি বাসায় রেখে আসেন রুমা। পরে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে চাপাতি, ব্লেড ও মাসুমের কিছু কাপড়চোপড় জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একেক সময় একেক কথা বলছেন রুমা। রুমার ভাষ্য, শিল্পপতি মাসুমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর পাশাপাশি মাসুম অন্য আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানতে পেরে রাগ-ক্ষোভ ও আবেগের বশে তাকে খুন করেন। ঘটনার দিন এক তরুণীকে নিয়ে মাসুম কাফরুলের বাসায় গিয়েছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে কোনো তরুণীকে নিয়ে বাসায় ঢুকতে দেখা যায়নি।

নিহতের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে মাসুম তার বাসা থেকে বের হয়ে গুলশান যান। এর পর ব্যক্তিগত চালককে বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা বলেন। মালেক নামে আরেক গাড়ির চালককে ডেকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিল তার। রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত মাসুমের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ ছিল। কোনো খোঁজ না পেয়ে সোমবার গুলশান থানায় জিডি করেন তার বড় ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু। এর পর তদন্তে নামে পুলিশের একাধিক সংস্থা। বুধবার সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কের উত্তর পাশে ৫ নম্বর সেক্টরের ব্রাহ্মণখালী এলাকায় লেকের পাড় থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশের সাত টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই লাশের টুকরা মাসুমের।

ওই শিল্পপতির গাড়িচালক আবদুল মালেক জানান, ‘নদী জলে শাপলা ভাসে’সহ দুটি সিনেমার প্রযোজক মাসুম। সিনেমা জগতে মিশতে গিয়ে অনেক নায়ক-নায়িকার সঙ্গে তার পরিচয়। এর সূত্র ধরে রুমা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তার বাসা কাফরুল। এর আগেও কয়েকবার ওই বাসায় গেছেন শিল্পপতি। তার সন্ধান পেতে ঘটনার পর রুমার বাসায় গেলে তিনি জানান, রোববার বিকেলে সেখানে যান মাসুম। আধা ঘণ্টা পর বাসা থেকে চলে যান।

About Admin

Check Also

‘এই দিন দিন না, আরও দিন আছে, সব দিন তো একরকম যায় না’, আদালতে বললেন কামরুল

আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে একটি হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিকালে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

No comments to show.