সর্বগ্রাসী যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে সারিয়াকান্দি উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে মানিক দাইর নামের একটি সমৃদ্ধ জনপদ। গত ২ মাসের ভাঙনে মানিক দাইরের ৩ শতাধিক ঘরবাড়ী এবং ২০০ একর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতংকে নদী পাড়ের শতাধিক পরিবার এবং মানিক দাইর বাজারের ২ শতাধিক দোকানি নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, কয়েক বছর ধরেই মানিক দাইর নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। অনেক গ্রাম, শত শত একর আবাদি জমি ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়ায় কয়েক বছর আগে মানিক দাইর বাজার ২ কিলোমিটার পূর্ব দিকে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
এখন সেখানেও নদী হানা দিয়েছে। বাজারের কাছেই মানিক দাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি গুচ্ছগ্রাম ও একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প অবস্থিত। ঐ দুটি প্রকল্পে ২০০ পরিবারের বসবাস। বর্তমানে ভাঙন পয়েন্ট থেকে বাজারের দূরত্ব ২০০ মিটার, বিদ্যালয় ও গুচ্ছগ্রামের দূরত্ব ৪০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, যে হারে নদী ভাঙছে, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে দুই, এক মাসের মধ্যেই বাজারসহ বিদ্যালয় ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প নদীতে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
চালুয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা জানান, ৭/৮টি সিট নিয়ে মানিক দাইর জনপদ। এই জনপদের কয়েক হাজার একর জমিতে তিন ফসলি আবাদ হয়। বিশেষ করে মরিচ উৎপাদনে এই এলাকা বিখ্যাত। কৃষকরা মরিচ বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করে থাকে। কয়েকদিন আগে মানিক দাইর ভাঙন এলাকা ইউএনও স্যারকে দিয়ে পরিদর্শন করিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান জানান, ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমি ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সারিয়াকান্দি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, আমি ইতিমধ্যে ভাঙন এলাকা সার্ভে করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, এ বিষয়ে বোর্ডে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করা হচ্ছে।